October 23, 2024, 7:20 am

সংবাদ শিরোনাম :
খুলনা কয়রায় হামলা করে আসামি ছিনতাই, ৫ পুলিশ সদস্য আহত খুলনা পাইকগাছায় বিগত এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৪ আহত ৫৬  কয়রায় এক নারী বাসা বাড়ি কাজ করতে করতে বর্তমানে চা বিক্রি করেই স্বাবলম্বী কয়রা প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতির মতবিনিময় সভা  আন্তরজাতকি এয়ারট্রাফকি কন্‌ট্রালারূক্স ডে উদযাপন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ আতিকুল ইসলামকে গ্রেফতার ১৯তম জাতীয় ফার্নিচার মেলা শুরু রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় কেশবপুরে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ৮৯ টি মন্ডপে  দুর্গা পূজা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলো  ঋণখেলাপি তারেক চৌধুরী অপকর্মের শেষ কোথায়।অবৈধ ক্ষমতার দাপটে গড়ে তুলেছেন ক্যাডার বাহিনি বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় তিন গৃহকর্মী গ্রেফতার, ৩১ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার

কালুখালী উপজেলায় জোয়ার নেই নৌকা-লাঙ্গলের । লড়াই হবে স্বতন্ত্রের সাথে স্বতন্ত্রের

বিশেষ প্রতিবেদক – পদ্মা এবং গড়াই নদীর স্নেহবাহুতে জড়িয়ে থাকা উপজেলার নাম কালুখালী । রাজবাড়ী জেলার ৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলা । সাম্প্রতি ঘোষিত হওয়া উপজেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম এইটি । এক সময়ের সন্ত্রাসের জনপদটির জনগণ এখন ঘুড়ে দাড়িয়েছে নিয়মতান্তিক জীবন যাপনের মধ্যে । আগামী ১৮ জুন এই উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে । প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা চলছে হরদম । বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা,স্বতন্ত্র আনারস এবং মটরবাইক । জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতিদ্বন্ধিতা করছে এই উপজেলায় ।
স্থানীয়রা জানান , মূলত লড়াই হবে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগের । নৌকার প্রার্থী কাজী সাইফুল ইসলাম , আনারস প্রতীকের আলীমুজ্জামান টিটো এবং মটর সাইকেল প্রতীকের নূরে আলম সিদ্দিকী হক । এরা তিনজনই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত । যদিও সাইফুল ইসলাম এবং টিটো স্থানীয় আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত হলেও নূরে আলম হক কেন্দ্রীয় রাজনীতির সাথে জড়িত । অপদিকে আনিসুর জামান লাঙ্গলের প্রার্থী উপজেলার রাজনীতিতে একেবারেই অপরিচিত । তিনি প্রতিদ্বন্ধিতায় কোন ভূমিকা রাখবেন বলে অনেকেই মনে করেন না ।

এলাকার নানান মতের ভোটার এবং পেশাজীবী মানুষের সাথে কথা বলেছেন আমাদের প্রতিনিধি । তাদের সবার কাছেই দুইটি প্রশ্ন করা হয় । একই দলের তিন প্রার্থী ভিন্ন প্রতীকে নির্বাচণ করছেন । তাদের নিয়ে মূল্যায়ন কি এবং নৌকা শাসক দলের প্রতীক , কেমন প্রতিদ্বন্ধিতা হবে মনে করেন ।

আওয়ামী বিরোধী রাজনীতি করেন এমন একজন শিক্ষক মনে করেন ,” নির্বাচন ত্রিমূখী মনে করলেও আসলে তা হবে দ্বীমূখী । লড়বে স্বতন্ত্রের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র”। সরকারী দলের প্রার্থীর অবস্থান এখানে আঞ্চলিক রাজনীতির কাছে হার মানবে ।

অন্যদিকে এই দুইটি প্রশ্ন করা হয় অন্যদেরও । একই দলের তিন প্রার্থী ভিন্ন প্রতীকে নির্বাচণ করছেন । তাদের নিয়ে মূল্যায়ন কি এবং নৌকা শাসক দলের প্রতীক , কেমন প্রতিদ্বন্ধিতা হবে মনে করেন ।

তারা যা মনে করেন তা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো – তাদের মতে ,যিনি নৌকা পেয়েছেন তার পেছনে নৌকার নামেমাত্র নেতা কর্মীরা কাজ করছে । সিংহভাগ কাজ করছে স্বতন্ত্র আনারসের পক্ষে এবং অল্প সংখ্যক নেমেছে মোটরবাইকের দিকে । ফলে যেহেতু অন্যদলের অধিকাংশ ভোটার কেন্দ্রে যাবে না বলে তারা তারা অনুমান করছেন ।

প্রার্থীদের ধারাবাহিক নির্বাচনী মাঠের অবস্থান –

কাজী সাইফুল ইসলাম ( নৌকা , বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ) নৌকার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম গতটার্মে উপজেলা চেয়ারম্যান থাকার সময় তার বিরুদ্ধে নানাবিধ দূর্ণীতির অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে ,স্থানীয় নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে বেড়েছে দূরত্ব ,তার পিতার বিরুদ্ধে স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচারণের অভিযোগ রয়েছে তার ভাইয়ের মাদক সাম্রাজ্য এবং সন্ত্রাস নিয়েও অভিযোগ আছে , অনেকে তার অতীত নিয়েও ঘাটছেন ,তার বিরুদ্ধে ডাকাতি এমনকি হত্যার মত নৃশংস ঘটনার সাথেও সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলছেন স্থানীয় অনেকে । সাথে যোগ হয়েছে সাম্প্রতিক নির্বাচনী সন্ত্রাস । ফলে নির্বাচনী দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছেন তিনি । অন্যদিকে বিরোধী ভোটাররা যেহেতু নৌকায় ভোট দেন না সচারচর , তাই দলের ভোটারদের ভোটে এই নির্বাচনে তার জয়ী হবার সম্ভবনা কমিয়ে দিয়েছে বলে অনেকের ধারণা ।

আনিসুর জামান ( লাঙ্গল , জাতীয় পার্টি ) জাতীয় পার্টির এই উপজেলা প্রার্থীকে নির্বাচনী মাঠে একেবারেই দেখা যাচ্ছে না বা তার কোন প্রচার প্রচারণা নেই বললেই চলে । উপজেলার কোথাও তার প্রতিনিধি বা প্রচারণা দৃশ্যমান নয় । তিনি রাজনীতিতেও তেমন পরিচিত নন । ফলে এই প্রার্থীকে নিয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছেন না কেউ ।

স্বতন্ত্র প্রার্থিদের সম্ভবনা –

নূরে আলম সিদ্দিকী হক ( মোটর সাইকেল , স্বতন্ত্র ) তিনি লোক হিসেবে সহজ সরল কিন্তু স্থানীয় রাজনীতির পাঠ এখনো পুরোপুরি আত্মস্থ করতে পারেননি । গতবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়েছিলেন এই উপজেলায় বর্তমান আনারসের প্রার্থী আলিমুজ্জামান টিটোর সমর্থনে । হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই করতে পেরেছিলেন মূলত অন্য প্রার্থী আলিমুজ্জামান টিটোর ভোট ব্যাংকের কারণে । টিটোর পিতা,চাচা এবং তার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা কালীণ সময়ে প্রায় কয়েক যুগ জনপ্রতিনিধি থাকায় একটি ভোট ব্যাংক বর্তমান যা গতবার লড়াইয়ে হক’কে সহায়তা করেছিল । বর্তমানে আলিমুজ্জামান টিটো নির্বাচন করায় নূরে আলম হক টিটোর সমর্থন পাবেন না । ফলে তার পরিচিত আত্মীয় স্বজন এবং এলাকার বিচ্ছিন্ন কিছু ভোট তার দখলে যাবে । তবে স্বতন্ত্র আনারসের সাথে লড়াই হবে তার ।

আলীমুজ্জামান টিটো ( আনারস , স্বতন্ত্র ) সকল বিতর্কের উর্দ্ধে এবং অতীতের ক্লীন ইমেজের কারণে এগিয়ে থাকবেন এবারের কালুখালী উপজেলা চেয়া্রম্যান নির্বাচনে । তার সমর্থকদের ভাষ্য , ভোট সুষ্ঠ এবং ভোটের সুযোগ পেলে অপর দুই প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের চেয়েও বেশী ভোট পেয়ে জিতে যেতে পারেন অলিমুজ্জামান টিটো আনারস প্রতীক নিয়ে । যদিও অনেকে তার পরিবারের অন্য জনপ্রতিনিধীদের এলাকার উন্নয়নের অমনোযোগীতার অভিযোগ রয়েছে । কিন্তু তিনি নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা কালীণ উন্নয়ন করে সে অভিযোগ পশমন করেছেন ভালভাবেই । ফলে কালুখালী উপজেলা নির্বাচনে অধিকাংশ ভোটাররা তাকে যোগ্য মনে করে চেয়ারম্যান হিসেবে এগিয়ে রাখছেন ।

( রিপোর্টটি সংশ্লিষ্ট উপজেলার নানান শ্রেনীর কিছু পেশাজীবি এবং ভোটারদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা )

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন